রাজু সরকার॥ হবিগঞ্জের বাহুবল উপজেলার হাওর অঞ্চলে চলছে বোরো ধান কাটার মহোৎসব। সোনালী ফসল ঘরে তুলতে হাওরের পরিশ্রমী কৃষকেরা ভোর থেকে শুরু করে দিনভর ব্যস্ত থাকছেন ধান কাটা, মাড়াই ও ঘরে তোলার কাজে। তবে এবারের মৌসুমে কৃষকের মুখে হাসির ঝিলিক না হলেও খেয়ে বেঁচে থাকার প্রত্যাশা নিয়েই ধান কাটছেন কৃষকগণ। আর মূলত: হাওর অঞ্চলের কৃষকদের আয়ের প্রধান উৎসই হচ্ছে বোরো ধান।
কিন্তু এবারের বোরো মৌসুমে দীর্ঘ খরা তথা অনাবৃষ্টির কারণে ধান গাছের উৎপাদন ক্ষমতা নষ্ট হয়ে যায়। খরা অনাবৃষ্টির কারণে খাল বিল নদীনালা শুকিয়ে চৌচির হয়ে যায়। ফলে ধানগাছগুলো মরে যাওয়ায় পরিপক্ক হতে পারেনি। যাই উৎপাদন হয়েছে তাতে চিটার হারই বেশি। তবে এক্ষেত্রে মৌসুমের শেষ বেলায় এসে বৃষ্টি হওয়ায় উজানের দিকে কৃষকগণ বোরো ফলনে কিছুটা উপকৃত হয়েছেন। কোন অবস্থায়ই কাঙ্খিত ফলনের আশা করছেন না তারা। সরেজমিন বাহুবলের রৌয়াইল, বক্তারপুর, সারংপুর, সোয়াইয়া, রাছুলপুর, মানিকপুর, বাগদাইর এলাকায় গেলে দেখা যায়, আধুনিক প্রযুক্তির উপহার হার্ভেস্টার মেশিন দ্বারা কৃষকগণ ধানা কাটাচ্ছেন। আধুনিক প্রযুক্তির ছোঁয়া লাগায় ধানকাটার শ্রমিকরা বিশেষ করে দিনমজুর শ্রমিকরা অনেকটা অনাহারেই দিন দিন পার করছেন। কারণ এই বোরো মৌসুমে এক সময় শ্রমিকরা ধানের বিনিময়ে ধান কাটতেন। ধানের উৎপাদন হার আর ধান কাটানোর খরচের ভারসাম্যের পার্থক্য অনেক। এর কারণ হচ্ছে, কৃষি উপকরণের উর্ধমুখী দাম, খরা-অনাবৃষ্টি আর ধান সংগ্রহ খরচ। সবমিলিয়ে কৃষকগণ লাভবান নয়। যেহেতু হাওর অঞ্চলের কৃষকগণের প্রধান আয় বোরো ধান, যা বছরে একবারই ফলন হয়।
স্থানীয় নাজমুল ইসলাম নামে এক কৃষক বলেন- দীর্ঘ দিন ধরে বৃষ্টি না হওয়াতে এবারে ফসলের ফলন তেমন ভালো হয়নি। এ ছাড়া কৃষি উপকরণের দাম বৃদ্ধি থাকায় খরচের পরিমাণে আমরা লাভবান নই। এ ছাড়া বেশ কয়েকজন কৃষকদের সাথে আলাপ করলে তারা কৃষি উপকরণের দাম কমানোর দাবী জানান।